ইসি শতভাগ প্রস্তুত: ফেব্রুয়ারির প্রথমভাগেই সংসদ নির্বাচন সম্ভব
আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে, চট্টগ্রাম বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস: বিএনপির ভেতরেই কেন বিস্মৃত একটি দিন?
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ
সাতকানিয়ায় কলেজছাত্রী নাদিয়া নিখোঁজ: সন্ধান চেয়ে পরিবারের আবেদন
সাতকানিয়ায় ইউএনও পরিচয়ে প্রতারণা: জনসাধারণকে সতর্ক থাকার আহ্বান
বিজিবির অভিযানে ১৫ লাখ টাকার চোরাচালান পণ্য আটক
নকলার কৃষি কর্মকর্তাকে পেটালেন ছাত্রদল নেতা
সাতকানিয়ায় জব্দকৃত অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার নিলাম স্থগিত
চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেন নির্মাণের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাতকানিয়া সরকারি কলেজে এবারের এইচএসসি-২০২৫ পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয় ঘটেছে। কলেজের তিনটি বিভাগেই পাসের হার ও GPA–৫ প্রাপ্তির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, ব্যবসায় শিক্ষা, মানবিক ও বিজ্ঞান—এই তিনটি বিভাগে মোট ৯৫৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করেছে ৬০০ জন, আর ৩৮৫ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে, যা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল হিসেবে ধরা হচ্ছে।
বিভাগভিত্তিক ফলাফল বিশ্লেষনে দেখা যায় ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে অংশগ্রহণকারী ৪৬৯ জনের মধ্যে পাস করেছে ২২৭ জন, অকৃতকার্য ২৪২ জন। GPA–৫ পেয়েছে ১৪ জন। মানবিক বিভাগে ৩৭৫ জনের মধ্যে পাস করেছে ১৮০ জন, অকৃতকার্য ১৯৫ জন। GPA–৫ পেয়েছে মাত্র ৫ জন। বিজ্ঞান বিভাগে ৩১৪ জনের মধ্যে পাস করেছে ১৯৩ জন, অকৃতকার্য ১২১ জন। GPA–৫ পেয়েছে ৯ জন। এ হিসেবে কলেজের সামগ্রিক পাসের হার ৬২.৬৬ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
২০২৫ সালের এইচসএসস’র ফলাফল বেশ উদ্বেগজনক কারণ সাতকানিয়া সরকারি কলেজ দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। কিন্তু চলতি বছরের ফলাফল নিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
শিক্ষকরা বলছেন, করোনা-পরবর্তী সময় থেকে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে অনিয়মিত উপস্থিতি, অনলাইন শিক্ষায় ঘাটতি, পরীক্ষার প্রস্তুতির অভাব এবং পাঠদানের ধারাবাহিকতা নষ্ট হওয়াই এর অন্যতম কারণ।
একজন প্রভাষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “পাসের হার এমন নিচে নেমে আসা খুবই দুঃখজনক। কলেজের নামের সঙ্গে এই ফলাফল মানায় না। এখন থেকেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি নিশ্চিত ও নিয়মিত মূল্যায়ন না করলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।”
এবারের ফলাফল ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে দেখছেন অনেকেই। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এবারের ফলাফলকে “একটি সতর্ক সংকেত” হিসেবে দেখা উচিত। সামনে আরও বড় ব্যাচ পরীক্ষায় অংশ নেবে—এ অবস্থায় এখন থেকেই শিক্ষক ও প্রশাসনকে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।
অভিভাবক মহলও দাবি জানিয়েছেন—পাঠদানের মানোন্নয়ন, ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি এবং নিয়মিত মডেল টেস্ট চালুর মাধ্যমে কলেজের একাডেমিক পরিবেশ পুনর্গঠনের পদক্ষেপ নিতে হবে।
সাতকানিয়া সরকারি কলেজের এবারের এইচএসসি ফলাফল শুধু সংখ্যার দিক থেকে নয়, ভাবমূর্তির দিক থেকেও এক ধরনের ধাক্কা। একসময়ের সেরা ফলাফলধারী প্রতিষ্ঠানটিকে এই বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-প্রশাসনের যৌথ প্রচেষ্টা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মন্তব্য করুন