ইসি শতভাগ প্রস্তুত: ফেব্রুয়ারির প্রথমভাগেই সংসদ নির্বাচন সম্ভব
আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকবে, চট্টগ্রাম বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস: বিএনপির ভেতরেই কেন বিস্মৃত একটি দিন?
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ
সাতকানিয়ায় কলেজছাত্রী নাদিয়া নিখোঁজ: সন্ধান চেয়ে পরিবারের আবেদন
সাতকানিয়ায় ইউএনও পরিচয়ে প্রতারণা: জনসাধারণকে সতর্ক থাকার আহ্বান
বিজিবির অভিযানে ১৫ লাখ টাকার চোরাচালান পণ্য আটক
নকলার কৃষি কর্মকর্তাকে পেটালেন ছাত্রদল নেতা
সাতকানিয়ায় জব্দকৃত অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার নিলাম স্থগিত
চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেন নির্মাণের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান
পতিত ফ্যাসিস্ট আমলে গৌতম ধর আওয়ামী লীগের কিছু প্রভাবশালী নেতা এমপি নদভী, সাবেক এমপি এম এ মোতালেব, পার্বত্য চট্টগ্রামের নেতা বীর বাহাদুর এমপি এবং আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির একজন সদস্যের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ব্যবহার করে হুন্ডি ব্যবসা ও স্বর্ণ চোরাচালান করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যায়। শুধুমাত্র হুন্ডির ব্যবসা মাধ্যমেই একজন সাধারণ স্বর্ণকার থেকে অল্প সময়ে কোটিপতি। এছাড়া গৌতম ধরের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের আরও অভিযোগ রয়েছে, গৌতম এলাকার প্রভাব খাটিয়ে জমি, বাড়ি-ঘর দখল, এবং বিভিন্ন নারীর সাথে অনৈতিক শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন, নারীলিপ্সু গৌতম অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে জাত-ধর্মের বাচবিচার করে না। স্থানীয়রা বলছেন, তার এই উত্থান যেন আলাউদ্দিনের চেরাগ হাতে পাওয়ার মতো। তাকে নিয়ে ধারাবাহিক ৩ পর্বের প্রতিদেনের আজকের ১ম পর্বে থাকছে
“ইসকন নেতা চিন্ময় প্রভুর সহযোগী কে এই গৌতম?”
২য় পর্ব – “স্বর্ণের সামান্য কারিগর থেকে কোটিপতি বনে যাওয়া গৌতমের নেপথ্য হুন্ডি ও স্বর্ণ চোরাচালান”
৩য় পর্ব – “নারীলোভী ও মামলাবাজ গৌতম”
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বণিক পাড়া, রামপুর এলাকার বাসিন্দা গৌতম শংকর ধর প্রকাশ গৌতম ধর কালু (৫০), পিতা সাধন বিকাশ ধর, আবারও আলোচনায়।
অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশে ইসকনের প্রভাবশালী নেতা চিন্ময় প্রভুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে গৌতম শংকর ধর দীর্ঘদিন ধরে অরাজকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসকনের প্রভাবশালী নেতা চিন্ময় প্রভুর সঙ্গে তার একাধিক ঘনিষ্ঠ ছবি ভাইরাল হলে গৌতম ধরের নাম জড়িয়ে যায় আলোচিত এডভোকেট আলিফ হত্যা মামলাসহ ইসকন কানেকশান। স্থানীয় সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার আইনজীবি আলিফ হত্যা মামলার প্রধান আসামি চিন্ময় প্রভুর সঙ্গে স্থানীয় গৌতম শংকর ধরের সাথে আত্বীয়তার সূত্র ধরে একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, গৌতম শংকর ধর পাঞ্জাবি পরিহিত অবস্থায় চিন্ময় প্রভুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু ঘটনার অন্তরালে অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য। গৌতম ধর দীর্ঘদিন ধরে চিন্ময় প্রভুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে কাজ করছে এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তাকে সহায়তা করছে। গৌতম ধর অবৈধ হুন্ডি এবং স্বর্ণ চোরাচালানের টাকা চিন্ময় প্রভুর নেতৃত্বে ২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করতে ইসকন আন্দোলনের অর্থ যোগান দেয়। জুলাই আন্দোলনের সময় চট্টগ্রামের সাতকানিয়া কেরানিহাটে বিপ্লবী ছাত্র জনতার উপর হামলাকারিদের অর্থ যোগানদাতাও ছিল এই গৌতম।
পিছনে ফিরে দেখা:
চট্টগ্রাম নিউমার্কেট মোড়ে স্বাধীনতা স্তম্ভের উপর জাতীয় পতাকার উপর গেরুয়া পতাকা লাগিয়ে জাতীয় পতাকাকে অবমাননার ঘটনায় দুই যুবককে সদরঘাট হতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। গ্রেপ্তার দুই যুবকের নাম হলো – রাজেশ চৌধুরী ( ১৮) ও হৃদয় দাশ (২৫) । চট্টগ্রামে মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) কাজী মো: তারেক আজিজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিউমার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা লাগিয়ে অবমাননা করার
ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিসি টিভির ফুটেজ বিশ্লেষন ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জানা গেছে, ঘটনার দিন চট্টগ্রামের নিউমার্কেটের গোল চত্বরে একটি বাঁশ দিয়ে বাংলাদেশের পতাকার উপরে গেরুয়া পাতাকা লাগিয়ে দেয়া হয়। এরপর ছবিটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা সামালোচনা হয়। জাতীয় পতাকা বিধিমালা-১৯৭২ (সংশোধিত ২০১০)-এ বলা আছে, বাংলাদেশের পতাকার উপরে অন্য কোনো পতাকা বা রঙিন পতাকা উত্তোলন করা যাবে না। নিউমার্কেটের স্বাধীনতা স্তম্ভে গেরুয়া পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এই বিধিমালা লঙ্ঘন করা হয়েছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) আলোচিত সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এব্যাপারে কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিত ভাবে দেশের সার্বোভৌমত্বকে অস্বীকার এবং দেশের অখণ্ডতাকে অস্বীকার এবং দেশমাত্রিকার সার্বোভৌমত্বের প্রতি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার প্রতি অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে এ মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে । মো. ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, ইসকনের চিন্ময় কৃষ্ণসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহের ধারা সংযুক্ত আছে। মামলার আসামিরা হলেন- ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পুণ্ডরীক ধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ চন্দন কুমার ধর প্রকাশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী (৩৮), চট্টগ্রামের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্ত (৩৪), নগরীর প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলা রাজ দাশ ব্রহ্মচারী (৪৮), গোপাল দাশ টিপু(৩৮), ডা. কথক দাশ (৪০), প্রকৌশলী অমিত ধর (৩৮), রনি দাশ (৩৮), রাজীব দাশ (৩২), কৃষ্ণ কুমার দত্ত (৫২), জিকু চৌধুরী (৪০), নিউটন দে ববি (৩৮), তুষার চক্রবর্তী রাজীব (২৮), মিথুন দে (৩৫), রুপন ধর (৩৫), রিমন দত্ত (২৮), সুকান্ত দাশ (২৮), বিশ্বজিৎ গুপ্ত (৪২), রাজেশ চৌধুরী (২৮) এবং হৃদয় দাস (২৫)। একই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ইসকন সংগঠক চিন্ময় কৃঞ্চ দাশ ব্রহ্মচারী সনাতন জাগরণ মঞ্চ নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্রের দায়িত্বে আছেন। যদিও গৌতম ধর কোন পদে নেই, সে অর্থ যোগানদাতা বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরীর লালদিঘী মাঠে সংগঠনটির উদ্যোগে মহাসমাবেশ হয়। সমাবেশ থেকে দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় সমাবেশ এবং ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত ৫ অগাস্ট গণঅভুত্থানের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা নিউমার্কেট মোড়ে একটি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে। গত ২৫ অক্টোবর লালদিঘী মোড়ে সমাবেশের দিন ওই পতাকার ওপর সাম্প্রদায়িক ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে স্থাপন করে দেওয়া হয়, যা রাষ্ট্রের অখণ্ডতাকে অস্বীকার করার সামিল।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় পাতাকা উত্তোলন করে আসামিরা দেশের ভেতর অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশকে অকার্যকর করার রাষ্ট্রদোহ কাজে লিপ্ত আছে। দণ্ডবিধির ১২০(খ), ১২৪(ক), ১৫৩(ক), ১০৯ ও ৩৪ ধারায় মামলাটি দায়ের হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, একজন আলোচিত আলিফ হত্যা মামলা ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আসামির সঙ্গে গৌতম শংকর ধরের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। জনমনে প্রশ্ন কিসের জোরে সে এখনো জেলের বাহিরে। কারা তাকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে। যে অপরাধে চিন্ময় প্রভু কারাগারে তার অর্থ যোগানদাতা ও পরিকল্পনাকারি হিসেবে গৌতম ধরও সমান অপরাধী। সাধারণ মানুষের দাবি, গৌতম শংকর ধরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়াসহ তাকে দ্রুত গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হোক। তারমতো এরকম ইসকন সন্ত্রাসী বাহিরে ঘোরাফেরা করলে যেকোন সময় অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
তবে এ বিষয়ে গৌতম শংকর ধরের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মন্তব্য করুন